আজ বিটিআরসি ঘোষণা দিয়েছে যে, আমদানিকরা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলফোনে বিজয় কিবোর্ড লেআউট ইন্সটল থাকা বাধ্যতামূলক। এমনিই ফোনে ব্লটওয়্যার এর জ্বালায় বাচি না। তার উপর নাকি এখন বিজয়ও ইন্সটল করে দিবে ফোনে! এটা করার পিছনে হয়তো বাংলা ভাষাকে সহজলভ্য করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। আচ্ছা মেনে নিলাম। কিন্তু বিজয় কিবোর্ড লেআউটই কেন? এটি সরকারের কোনো পণ্যও নয়, ব্যক্তিগত মালিকানার একটি কিবোর্ড লেআউট। অন্যদিকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের তৈরি কিবোর্ড লেআউট ‘জাতীয়’ রয়েছে। কিন্তু সেটি অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। সেখানে বিজয় এর তো বাংলা ভাষা লেখার মানদণ্ড হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

সারপ্রাইজ! সারপ্রাইজ!! বিজয়ই নাকি বাংলা ভাষা লেখার মানদণ্ড। কিন্তু কোন যুক্তিতে ফ্রি কিবোর্ড লেআউট থাকার পরেও ব্যক্তিগত মালিকানার কিবোর্ড লেআউট কে বাংলা ভাষার মানদণ্ড করা হতে পারে! তার উপর সরকারি চাকরির পরীক্ষায় জোর করে এটি ব্যবহার করানো হচ্ছে। এখন তো আর আসকি স্ট্যান্ডার্ডের যুগ নেই, যখন এক কম্পিউটারে বাংলা লিখে অন্য কম্পিউটারে নিলে ভেঙ্গে যেত, বিজয়ের এক ভার্সনের লেখা অন্য ভার্সনে সাপোর্ট করতো না, ইন্টারনেটে বাংলা লিখা যেত না। এখন ইউনিকোড এর যুগ। আপনি যেই কিবোর্ড লেআউট ব্যবহার করেই বাংলা লিখুন না কেন সব কম্পিউটারে একই লেখা দেখাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখন ইউনিকোড ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৩-২০১৪ এর পরবর্তী এডোবি সফটওয়্যারগুলো সহ এমন কোনো সফটওয়্যার নেই যেখানে ইউনিকোড এখন সাপোর্ট করে না। ইউনিকোডই বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ।

ধিক্কার জানাই এই যুগে এসেও জোর করে একটি ব্যক্তিগত মালিকানার কিবোর্ড লেআউটকে প্রচার করাকে। স্বাধীন দেশের মাতৃভাষা লেখার স্বত্ব কোনো মুষ্টিমেয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে মুক্ত হোক। ভাষা নিয়ে ব্যবসা বন্ধ হোক, ভাষা হোক উন্মুক্ত।।

Source: https://www.jagonews24.com/m/health/news/826006